নিজস্ব প্রতিবেদক : ৪ এপ্রিল ২০২৩, মঙ্গলবার, ৩:৪২:৪৭
এশিয়ান হকি ফেডারেশনের (এএইচএফ) সহসভাপতি নির্বাচিত হয়ে দেশের জন্য সম্মান ও গৌরব বয়ে এনেছেন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের (বাহফে) সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ। ২২-২৩ মার্চ দক্ষিণ কোরিয়ায় এএইচএফ -এর কংগ্রেসে সর্বোচ্চ ২৯ ভোট পেয়ে তিনি সহসভাপতি নির্বাচিত হন। এশিয়ান হকিতে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পদপ্রাপ্তি। শুধু তাই নয়, দেশের হকিতে বিশেষ অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ এশিয়ান হকি ফেডারেশন থেকে অর্ডার অব মেরিট অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
একই কংগ্রেসে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সহসভাপতি আব্দুর রশিদ শিকদার। এ নিয়ে তিনি টানা তৃতীয়বার এএইচএফ -এর সদস্য নির্বাচিত হন। তিনিও দেশের হকিতে বিশেষ অবদান রাখায় স্বীকৃতিস্বরূপ এশিয়ান হকি ফেডারেশনের অর্ডার অব মেরিট অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন।
এছাড়া বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের আরেক সহসভাপতি সাজেদ এ এ আদেল এএইচএফ -এর উপদেষ্টা হিসেবে নির্বাচিত হয়ে দেশের হকিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলোকিত করেছেন। আন্তর্জাতিক আঙিনায় এমন অর্জনে খুশি বাংলাদেশের হকি অঙ্গন।
মওলানা ভাসানী জাতীয় হকি স্টেডিয়ামে ৩ এপ্রিল এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের পক্ষ থেকে সাঈদ, রশিদ এবং সাজেদকে সংবর্ধনা দেওয়া করা হয়। তিনজনকে ফুলেল শুভেচ্ছার পাশাপাশি ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। একইভাবে জাতীয় দলে সাবেক খেলোয়াড়, বিভিন্ন ক্লাব প্রতিনিধিগণ, বয়সভিত্তিক জাতীয় দলের খেলোয়াড়, কর্মকর্তারা তাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পর স্বাধীনতার মাসেই বাংলাদেশ আরো একটি জায়গায় তার সর্বোচ্চ সম্মানটুকু পেল। আমি মনে করি সেই অর্জনে আমার নাম যুক্ত হওয়ার আমি যত না আনন্দিত; তার চেয়েও বেশি আনন্দিত আমার দেশকে আমি এশিয়ান হকি ফেডারেশনের কংগ্রেসে প্রতিনিধিত্ব করেছি। আমার দেশকে, আমার জাতীয় পতাকাকে এশিয়ার সর্বোচ্চস্থানে নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে সর্বোচ্চ ভোটে সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছি। এশিয়ান হকি ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটিতে আমি সহসভাপতি ছাড়াও আমাদের আব্দুর রশিদ শিকদার ভাই সদস্য এবং আমাদের হকির বয়োজ্যেষ্ঠ সংগঠক সাজেদ এ এ আদেল ভাই উপদেষ্টা কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। এই আনন্দ-অনুভূতি ভাষায় প্রকাশের চেয়ে দায়িত্ব পালনের রেশটা অনেক বেশি।’
এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বপ্ন নিয়ে হকি ফেডারেশনকে পূনর্গঠন করেছিলেন; আমাদের রাষ্ট্রনায়ক প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট খেলোয়াড় গড়তে সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের ফেডারেশনের দায়বদ্ধতা থাকবে সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করে হকির কার্যক্রমকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে। আজকে হকি বিভিন্ন ইভেন্টের মাধ্যমে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। ইনডোর হকি হচ্ছে, সিক্স-এ-সাইড হচ্ছে সেসব নিয়ে যদি আমরা কাজ করতে পারি, আমাদের যে ট্যালেন্ট আছে আমি মনে করি তাদের সঠিকভাবে পরিচর্চা করতে পারলে শুধু র্যাংকিংয়েই উন্নতি নয়, আমাদের যে স্বপ্ন বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করা, সেটাও সম্ভব হবে।
দেশের হকিতে এগিয়ে নিতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজের আহবান জানিয়ে এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ বলেন, ‘আমরা সত্তর দশকে ভারত, পাকিস্তানের মতো শক্ত প্রতিপক্ষের ঘাড়ে তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলেছি; আশির দশকে হকিকে শাসন করেছি; তেমনি আমরা যদি তৃণমূলে কাজ করে জাতীয় দলকে শক্তিশালীভাবে গড়ে তুলি তাহলে আমরা বিশ্বমঞ্চে আমাদের জাতীয় পতাকাতে সুউচ্চে তুলে ধরতে পারব। রাষ্ট্রের জন্য সম্মান বয়ে নিয়ে আসতে পারব। আমরা পরিকল্পনামাফিক কাজ করে আমাদের হকিকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাব। এ জন্য আমি মিডিয়াসহ সবার সহযোগিতা কামনা করছি।’
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আব্দুর রশিদ সিকদার বলেন, ‘এই নিয়ে তিনবার আমি এশিয়ান হকির কার্যনির্বাহি কমিটির সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। অন্যান্যবারের চেয়ে এবারের অনুভূতি একেবারে আলাদা। কারণ আমাদের হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ এর সহসভাপতি নির্বাচিত হওয়াটা এটাকে ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। আমরা সহসভাপতিসহ তিন জন কার্যনির্বাহী কমিটিতে আছি।
আব্দুর রশিদ সিকদার আরো বলেন, ‘কাজ যখন মানুষ করে, কাজের স্বীকৃতি সে পায়। তার (সাঈদের) সহসভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পেছনে মূল যে কারণ আমি বলবো সেটা হলো সে যখন হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন, তখন হকিতে যে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছিল সেটা সবাই দেখেছেন। ছেলেদের হকি, মেয়েদের হকি, কোচিং প্যানেল নিয়ে আমরা কাজ করেছি। আমরা সাফল্য তখনই পাবো যখন এশিয়ান হকি ফেডারেশন থেকে সুযোগ সুবিধা নিয়ে আমরা দেশের হকিতে উন্নয়ন আনতে পারবো।’
সাজেদ এ এ আদেল বলেন, ‘আমি দেশের পতাকাকে, দেশে কোটি মানুষকে বিশ্ব দরবারে রিপ্রেজেন্ট করছি -এটাই আমার বড় প্রাপ্তি। আমি এবং আমার সহকর্মীরা বাংলাদেশের হকিকে এগিয়ে নিতে চাই। আমরা ভাল খেলে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের হকিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। সামনে আমাদের জুনিয়র হকি বিশ্বকাপ আছে। আমরা সেখানে ভাল খেলে নিজেদের প্রমাণ করতে চাই।’
Rent for add