• ঢাকা, সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এশিয়া কাপ হকিতে ভারত চ্যাম্পিয়ন

এশিয়া কাপ হকি জিতল ভারত। গত বারের বিজয়ী দক্ষিণ কোরিয়াকে ফাইনালে ৪-১ গোলে উড়িয়ে আবার ট্রফি জিতে নিল তারা। জোড়া গোল করে ফাইনালের নায়ক দিলপ্রীত সিংহ। অপর দু’টি গোল সুখজিৎ সিংহ এবং অমিত রোহিদাসের। সূত্র: আনন্দবাজার.কম

এই নিয়ে চার বার এশিয়া কাপ জিতল ভারত। ২০০৩-এ প্রথম বার এশিয়া কাপ জিতেছিল পাকিস্তানকে ৪-২ হারিয়ে। ২০০৭-এ কোরিয়াকে ৭-২ গোলে হারিয়ে ট্রফি জিতেছিল। তৃতীয় বার ২০১৭-য় মালয়েশিয়াকে ২-১ হারিয়েছিল ভারত।

পরের বছর হকি বিশ্বকাপের টিকিটও আদায় করে নিল ভারত। তারা বিশ্বের চতুর্থ দল যারা প্রতিটি হকি বিশ্বকাপে খেলেছে। বাকি তিনটি দল হল জার্মানি, নেদারল্যান্ডস এবং স্পেন। ভারত মাত্র এক বারই বিশ্বকাপ জিতেছে। ১৯৭৫-এ পাকিস্তানকে ২-১ হারিয়েছিল। তার আগ ১৯৭৩-এ রানার্স এবং ১৯৭৫-এ তৃতীয় হয়েছিল তারা। শেষ বার ২০২৩-এ ভুবনেশ্বর ও রৌরকেলায় হয়েছিল হকি বিশ্বকাপ। ভারত নবম স্থানে শেষ করেছিল।

রবিবার রাজগীর স্টেডিয়ামে তখনও বোধহয় দর্শকেরা নিজেদের আসনে ঠিক করে বসেনওনি। তার আগেই গোল করে ভারত। খেলা শুরু হওয়ার বাঁশি বাজার পর থেকেই নাগাড়ে আক্রমণ করতে থাকে তারা। কোরিয়াকে তাদের বৃত্তের মধ্যে ঠেলে দেয়। আচমকাই বৃত্তের মধ্যে বল পেয়ে যান সুখজিৎ। রিভার্স হিটে গোল করেন তিনি। ৩১ সেকেন্ডের মধ্যে এগিয়ে যায় ভারত।

শুরুতেই গোল পেয়ে ভারতের আক্রমণের ঝাঁজ অনেকটাই বেড়ে যায়। কোরিয়াকে আক্রমণ করতে করতে কোণঠাসা করে ফেলে তারা। গোটা ভারতীয় দলই তখন কোরিয়ার অর্ধে উঠে এসেছিল। রাজকুমার পাল কোণাকুণি একটি বল পেয়েছিলেন। কিন্তু কোরিয়ার রক্ষণ ভেদ করে গোল করতে পারেননি।

ন’মিনিটের মাথায় একটি পেনাল্টি স্ট্রোক পায় ভারত। যুগরাজ সিংহকে শট নেওয়ার সময় অবৈধ ভাবে বাধা দেওয়া হয়। তিনিই পেনাল্টি স্ট্রোক নিতে এগিয়ে যান। গোলকিপারের ডান দিকে মেরেছিলেন তিনি। কিন্তু কোরিয়ার গোলকিপার সেই প্রয়াস বাঁচিয়ে দেন। ব্যবধান বাড়াতে পারেনি ভারত।

প্রথম কোয়ার্টারে দুই দল যতটা আগ্রাসী খেলেছিল, দ্বিতীয় কোয়ার্টারে ততটাই বিরক্তিকর হকি খেলা হয়। কোরিয়া তত ক্ষণে রক্ষণ মজবুত করে ফেলেছিল। ফলে ভারতের পক্ষে তাদের রক্ষণ ভেঙে ঢোকা ক্রমশ কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। গোলের ভাল সুযোগ তৈরিই হচ্ছিল না।

ঠিক যখন মনে হচ্ছিল দ্বিতীয় কোয়ার্টারে গোল হবে না, তখনই ব্যবধান বাড়ায় ভারত। একটি লম্বা বল রিসিভ করে দিলপ্রীতের দিকে বাড়িয়েছিলেন সঞ্জয়। বিপক্ষের ডিফেন্ডারেরা ঘিরে থাকলেও ফাঁক খুঁজে গোল করে ভারতের ব্যবধান বাড়ান দিলপ্রীত।

তৃতীয় কোয়ার্টারের পাঁচ মিনিটের মধ্যে গোল করে ফেলেছিল ভারত। বৃত্তের মধ্যে থেকে অভিষেকের শট বাঁচান কোরিয়ার গোলকিপার। ফিরতি বলে দিলপ্রীত গোল করলেও তা বাতিল করে দেন আম্পায়ার। কারণ ভারতের একটি ফাউলের জন্য আগেই খেলা থামানোর বাঁশি বাজিয়েছিলেন তিনি। এর পর একটি পেনাল্টি কর্নারও নষ্ট করে ভারত। তবে তৃতীয় গোল পেতে বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। অধিনায়ক হরমনপ্রীত সিংহ বৃত্তের মধ্যে থাকা রাজিন্দরকে পাস দিয়েছিলেন। তার থেকে পাস পেয়ে দিলপ্রীত গোল করেন।

চতুর্থ কোয়ার্টারেও ভারতের আক্রমণ বজায় থাকে। পাঁচ মিনিটের মধ্যে চতুর্থ গোল করে তারা। এই গোলে স্পষ্ট বোঝা যায় তাদের বুদ্ধিমত্তার ছাপ। পেনাল্টি কর্নার পেয়েছিল ভারত। শট মারার জন্য তৈরি ছিলেন হরমনপ্রীত, যিনি পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করার জন্য সিদ্ধহস্ত। তবে বল যায় পাশের ‘ব্যাটারি’তে থাকা অমিত রোহিদাসের কাছে। কোরিয়ানরা হরমনপ্রীতের দিকে দৌড়নোর পর বুঝতে পারেন বল অমিতের কাছে গিয়েছে। কিছু বোঝার আগেই অমিতের শট কোরিয়ার গোলে ঢুকে যায়।

পরের মিনিটে একটি গোল শোধ করে কোরিয়া। পেনাল্টি কর্নার থেকে গোল করেন সন দাইন। এর পর আরও একটি পেনাল্টি কর্নার পেলেও কাজে লাগাতে পারেনি তারা। পাশাপাশি ভারতের রক্ষণ এতটাই মজবুত ছিল যে তা ভেঙে ফিল্ড গোলও করতে পারেনি।

 

Rent for add