• ঢাকা, রবিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫

জুনিয়র বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

ওমানের সালালাহ শহরে জুনিয়র এশিয়া কাপ হকি টুর্নামেন্টের মাধ্যমে জুনিয়র বিশ্বকাপে খেলার স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। আগামী ২৩ মে থেকে ১ জুন অনুষ্ঠিতব্য এ টুর্নামেন্টে লাল-সবুজ পতাকাধারী খেলোয়াড়দের সামনে ভাল একটা সুযোগ আছে বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করার। তারা সেমিফাইনালে উঠতে পারলে কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছে যাবে।

১০ জাতির এই আসরে বাংলাদেশ ‘বি’ গ্রুপে মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, উজবেকিস্তান ও স্বাগতিক ওমানের মোকাবেলা করবে। অন্যদিকে ‘এ’ গ্রুপে খেলবে ভারত, পাকিস্তান, জাপান, থাইল্যান্ড ও চাইনিজ তাইপে।

স্বপ্নের জুনিয়র বিশ্বকাপ সামনে রেখে এএইচএফ কাপের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ দল জুনিয়র এশিয়া কাপ হকি টুর্নামেন্টে ভাল করার প্রত্যয়ে তিন মাসের মতো অনুশীলন-প্রশিক্ষণ-প্রস্তুতিমূলক ম্যাচের মধ্যে ছিল। এর মধ্যে ভারতে ২০ দিনের কন্ডিশনিং ক্যাম্পের পাশাপাশি ১০টি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলেছে। শুধু তাই নয়, ওমানে পৌঁছে বেশ কয়েক দিন প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পেয়েছে। এমন কি, সেখানে ভারতের সঙ্গে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছে। অতীতে জুনিয়র দল এতো লম্বা সময়ের জন্য কখনো দীর্ঘ মেয়াদী প্রস্তুতি না পেলেও বর্তমান কমিটি সেটি করে দেখিয়েছে। তাই ভাল একটি প্রস্তুতি নিয়েই আগামীকাল থেকে বাংলাদেশ জুনিয়র এশিয়া কাপ খেলতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ বলেন, আমাদের লক্ষ্য সেমিফাইনাল। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করছি। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, জানুয়ারিতে এএইচএফ কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মার্চের ৬ তারিখ থেকে ৩৬ জন খেলোয়াড় নিয়ে জুনিয়র এশিয়া কাপ তথা জুনিয়র ওয়ার্ল্ড কাপ কোয়ালিফায়ারে খেলার জন্য প্রস্তুতি পর্ব শুরু করি। এরপর বাছাইকৃত ২৩ জনকে ভারতে কন্ডিশনিং ক্যাম্পের জন্য পাঠানো হয়। সেখান থেকেই ১৮ সদস্যের দল চূড়ান্ত করে ওমানে পাঠানো হয়েছে। অপর এক প্রশ্নে বলেন, ঘরোয়া হকির ইতিহাসে সিনিয়র বা জুনিয়র দল কখনোই এতো দীর্ঘমেয়াদী আবাসিক ক্যাম্প করার সুযোগ পাননি। টুর্নামেন্টে ভাল করার প্রত্যয়ে পারফেক্ট একটা দল তৈরির জন্যই সর্বোচ্চ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি।

এদিকে প্রধান কোচ আ ন ম মামুন উর রশিদ বলেন, জুনিয়র বিশ্বকাপে জায়গা করে নেওয়া কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, গ্রুপ পর্বে তিনটি জয় পেলেই আমরা সেমিফাইনালে পৌঁছে যাব। কেননা আমাদের গ্রুপে যারা রয়েছে তাদের মধ্যে আমরা গত জানুয়ারিতে এএইচএফ কাপের গ্রুপ পর্বে উজবেকিস্তানকে ৬-১ গোলে হারিয়েছি। ফাইনালে স্বাগতিক ওমানকে টাইব্রেকারে ৭-৬ গোলে হারিয়েছি। যদিও নির্ধারিত সময়ে খেলাটি ১-১ গোলে ড্র ছিল। দেশের এ অভিজ্ঞ কোচ বলেন, আশা করছি, ওমান ও উজবেকিস্তানকে হারাতে পারব। এরপর মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া যে কোন একটি দলের বিপক্ষে জয় পেলেই আমরা কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারব। আ ন ম মামুন উর রশিদ আরো বলেন, ২০১৫ সালে মালয়েশিয়ায় সবশেষ জুনিয়র এশিয়া কাপেও আমরা ৫-৪ গোলে ওমানকে হারিয়েছে। এমন কি ২-০ গোলে দক্ষিণ কোরিয়াকে হারিয়েছিলাম। কাজেই অতীত পরিসংখ্যানই আমাদের সাহস যোগাচ্ছে। খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাসী করে তুলছে। আমরা পরিকল্পিতভাবে মাঠে খেলতে পারলে জুনিয়র বিশ্বকাপে খেলা কোনো ব্যাপার না।

অধিনায়ক প্রিন্স লাল সামন্ত বলেন, আমরা দীর্ঘ সময় ধরে এক সঙ্গে অনুশীলন ও প্রশিক্ষণে থাকায় দলের সবার মধ্যে একটা চমৎকার বোঝাপড়া গড়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, দেশে সিনিয়র দলের সঙ্গে প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ খেলে আমাদের ভীতিটা কমে গেছে। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ভারতে কন্ডিশনিং ক্যাম্প এবং ১০টি প্রস্তুতিমূলক ম্যাচ থেকে আমাদের অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে। ম্যাচ টেম্পারামেন্টের অভিজ্ঞতা বেড়েছে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকেই জুনিয়র এশিয়া কাপে আরো ভাল খেলতে আমাদের সহায়তা করবে। অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছানো কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। আমাদের লক্ষ্য সেরা চার দলে থাকা। আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিপক্ষের সঙ্গে লড়াই করে কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছুতে শক্তি-সামর্থ সবটুকু উজার করে খেলার চেস্টা করব।

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২১ জাতীয় হকি দল

টিম লিডার : মাহাবুবুল এহসান রানা। ম্যানেজার : হাজী মোহাম্মদ হুমায়ুন। সহকারী ম্যানেজার : খাজা তাহের লতিফ মুন্না।

প্রধান কোচ : আ ন ম মামুন উর রশিদ। সহকারী কোচ : হেদায়তুল ইসলাম খান রাজীব। ভিডিও অ্যানালিস্ট : তাপস বর্মণ।

গোলরক্ষক : নুরুজ্জামান নয়ন, সাইজুদ্দিন।

রক্ষণভাগ : আমিরুল ইসলাম, মেহরাব হাসান সামিন, আমান শরীফ, রামিম হোসেন, রাহিদ হাসান জীবন, শহিদুল হক সৈকত।

মধ্যমাঠ : প্রিন্স লাল সামন্ত (অধিনায়ক), আবেদ উদ্দিন, আজিজার রহমান, শাহিদুর রহমান সাজু , সাবেদুর রহমান মিঠু।

আক্রমণভাগ : মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, রকিবুল হাসান রকি, ওবায়দুল হক জয়, তাসিন আলী, জাহিদ হোসেন।

স্ট্যার্ন্ড বাই
গোলরক্ষক : আল আমিন মিয়া। রক্ষণভাগ : আসাদুজ্জামান চাঁদ ও মেহেদি হাসান মুন্না। আক্রমণভাগ : দেবাশীষ কুমার রায়।

গ্রুপ পর্বে যাদের সঙ্গে খেলবে

২৩ মে
বাংলাদেশ : ওমান

২৫ মে
বাংলাদেশ : মালয়েশিয়া

২৬ মে
বাংলাদেশ : উজবেকিস্তান

২৮ মে
বাংলাদেশ : দক্ষিণ কোরিয়া

৩১ মে
সেমিফাইনাল

১ জুন
ফাইনাল

Rent for add