বিশেষ সংবাদদাতা : ১৭ এপ্রিল ২০২৩, সোমবার, ৮:১১:২০
বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচন এখন দুয়ারে কড়া নাড়ছে। ইতোমধ্যে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এ ফেডারেশনের নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু করেছে।
আগামী ৫ মে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের বর্তমান নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গত ১৩ এপ্রিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে কমিশন সভা করে খুব শিগগিরই পবিত্র ঈদ উল ফিতরের পরপরই নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করবে।
সবশেষ বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল। সেই নির্বাচনে কিংবদন্তী ক্রীড়াবিদ আব্দুস সাদেককে সাধারণ সম্পাদক পদে পরাজিত করে চমক দেখিয়ে ছিলেন এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু ও নির্বাচনের জন্য কমিশন গঠনের পরপরই আসন্ন এ নির্বাচনকে ঘিরে এরই মধ্যে হকি আঙিনায় নির্বাচনী হাওয়া লেগেছে। ২৯ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী পরিষদে পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক কে হতে পারেন- এ নিয়ে নানারকম জল্পনা-কল্পনা চলছে।
এক জরিপে দেখা গেছে জনপ্রিয়তার নিরিখে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মমিনুল হক সাঈদকে ৮৫% কাউন্সিলররা পুনরায় এ পদে দেখতে চান। নানা কারণে তিন বছর বিদেশ থাকলেও হকি উন্নয়নে তিনি যতটুকু দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছেন সবটুকুরই সদ্ব্যবহার করে মৃতপ্রায় হকিকে পুনজাগরণ করতে সক্ষম হয়েছেন।
বিশেষ করে নারী হকির প্রচলন, দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণ ও বিদেশের মাটিতে প্রথমবারের নারী দলকে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট খেলতে সিঙ্গাপুর প্রেরণ, জাতীয় পুরুষ দলকে শক্ত অবকাঠামোয় দাঁড় করানো, খেলোয়াড়দের আর্থিক নিশ্চয়তা, ঢাকায় এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি এসব কিছুর পেছনেই ছিল তার মুখ্য ভূমিকা। এমনকি ফেডারেশনটির আর্থিক দুরবস্থাও কাটিয়ে তুলেছিলেন।
এদিকে ঘরোয়া হকির গন্ডি পেরিয়ে এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ সাংগঠনিক দক্ষতা দেখিয়ে এ বছর (২৪ মার্চ) দক্ষিণ কোরিয়ায় এশিয়ান হকি ফেডারেশনের নির্বাচনে চার বছর মেয়াদি কার্যনির্বাহী কমিটিতে সর্বোচ্চ ২৯ ভোট পেয়ে সহসভাপতি পদে নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের কোনো সংগঠক এশিয়ান হকি ফেডারেশনে প্রথমবারের মতো এমন সর্বোচ্চ পদে নির্বাচিত হয়ে তিনি আন্তর্জাতিক আঙিনায় দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেন।
শুধু কি তাই। ঘরোয়া হকিতে বিশেষ অবদান রাখায় এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ এ বছর এশিয়ান হকি ফেডারেশনের অর্ডার অফ মেরিট অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। যা ছিল বাংলাদেশের হকির জন্য এক অনন্য সম্মান।
বিশেষ করে ঘরোয়া হকিতে প্রাণ ফিরিয়ে আনা, আন্তর্জাতিক হকিতে সাংগঠনিক দক্ষতা দেখিয়ে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা, জাতীয় দলের সাম্প্রতিক সাফল্য ও ফেডারেশনে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনা- এসব কিছুর বিবেচনায়ই বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের আসন্ন নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে এ কে এম মমিনুল হক সাঈদ জরিপে এগিয়ে রয়েছেন।
তবে অপ্রিয় হলেও সত্যি, বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচনী সংস্কৃতি তেমন সুখকর নয়। ২০১৩ সালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পাঁচ কাউন্সিলর নিয়ে একটি পক্ষ নির্বাচন বয়কট করেছিল এবং পরবর্তীতে তারা ফেডারেশনের কর্মকাণ্ডেও অংশগ্রহণ করেননি। সেই আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সাধারণ সম্পাদককে (খাজা রহমত উল্লাহ) সহসভাপতি ও সহসভাপতিকে (আব্দুস সাদেক) সাধারণ সম্পাদক করে একটা মীমাংসা হয়েছিল। পরবর্তী নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হলে আবার দুটি পক্ষে ভাগ হয়ে তৈরি হয় অচলাবস্থা। পরবর্তীতে অনেক দিন অ্যাডহক কমিটি দিয়ে ফেডারেশনে কার্যক্রম চলে। এরপর প্রায় এক যুগ পর ২০১৯ সালে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই নির্বাচিত কমিটির মেয়াদই এখন শেষের (৫ মে) দিকে।
Rent for add